E-book: স্মার্ট ক্যারিয়ার ফ্রিল্যান্সিং

About Course
এই বইয়ে টোটাল ১৭ টা অধ্যায় আছে। এই বইয়ে আমি মূলত শেয়ার করেছি, একজন ফ্রিল্যান্সার কিভাবে তার একটা সুন্দর ক্যারিয়ার দাঁড় করাবে। এখানে ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করে, ক্লায়েন্ট হান্টিং, এজেন্সি তৈরি করা, মার্কেটিং, প্যাসিভ ইনকাম সোর্চ তৈরি করা, সাইড ইনকামের স্ট্রিম বানানো, কমিউনিকেশন স্কিল, নেটওয়ার্কিং, বিজনেস সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। নিচে কোর্স কন্টেন্টে ক্লিক করলে অধ্যায় গুলার নাম দেখতে পাবেন, এবং প্রতিটি অধ্যায়েই বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বইটা কেমন সেটা বোঝার জন্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
প্রথম অধ্যায় – ফ্রিল্যান্সিং টু ক্যারিয়ার
এই বইটা আপনি পড়া শুরু করেছেন মানে, আপনি অলরেডি একজন ফ্রিল্যান্সার বা এই পথের পথিক।
আচ্ছা একটা প্রশ্ন, আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিলেন কেন?
- টাকার প্রয়োজনে?
- ভালো লাগা থেকে?
- পার্ট টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে?
- নাকি অন্য কিছু?
যে কারণেই শুরু করেন না কেন, আপনি কি জানেন? ফ্রিল্যান্সিং করেই একটা ক্যারিয়ার দাঁড় করানো সম্ভব?
এবং সেটা ‘কোনমতে জীবনযাপন’ করার মতো কোন ক্যারিয়ার নয়, বরং রীতিমতো বাড়ি-গাড়ি বানিয়ে ভালোভাবে একটা হেলদি ও স্মার্ট জীবনযাপন করার মতো ক্যারিয়ার দাঁড় করানো সম্ভব!
তার জন্য প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্ত, ও তার সদ্ব্যবহার।
আর কিভাবে আপনি সেই সিদ্ধান্ত নিবেন, কিভাবে টাকাকে আপনার জন্য কাজ করাবেন, কিভাবেই বা দুর্দান্ত একটা হ্যাপি লাইফ লিড করবেন, এই বইয়ে আমরা সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
এবং একটা ব্যাপার ক্লিয়ার করি। এসব কথা আমি যাস্ট বলার জন্য বলছি না! বরং, আমি নিজে এই জার্নির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, কিংবা চলছি।
আমি যদি ১৭ বছর বয়সে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে, ২০ বছর বয়সে প্রথম অর্ডার পেয়ে, ২৫ বছর বয়সে ১.৫ কোটি ভ্যালুয়েশনের একটা বাড়ি ওন করতে পারি, তাহলে আপনি কেন পারবেন না?
বিশ্বাস করেন, আমার থেকে আপনারা অনেকে আরও অনেক বেশি অংকের টাকা উপার্জন করেন।
কিন্তু প্রোপার মডেল ফলো করার কারণে, আমি অনেককিছুই অন্য অনেকের থেকে অনেক ভালোভাবে গুছিয়ে নিতে পেরেছি। সেই মডেল ফলো করলে, আপনিও পারবেন।
চলেন একটা বাস্তব ঘটনা শেয়ার করি।
আমি ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে সিটি ব্যাংকের সাতক্ষীরা ব্রাঞ্চে গিয়েছি একটা কাজে। কিছু সময় পরে একজন আমার কাছে এসে বললেন, “তমাল দাদা না?”
আমি বললাম, “হ্যাঁ”।
সে বললো – “আপনার সাথে কিছু কথা আছে।”
আমি বললাম – “বলেন”
তারপর সে বলা শুরু করলো – “আমি অনেক আগে থেকেই ফ্রিল্যান্সিং করছি। ২০১৪ থেকে। আগে ঢাকায় থাকতাম। ইদানিং বাড়িতে আছি। ফাইবারে টপ রেটেড সেলার ছিলাম। একাউন্ট ব্যান হবার পর অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু নতুন করে আর তেমন অর্ডার পাচ্ছি না। কিছু টিপস দিবেন?”
তো আমি তাকে পার্সোনাল ব্রান্ডিং, ব্রান্ড ইমেজ ক্রিয়েশন, মার্কেটপ্লেসের বাইরে ক্লায়েন্ট হান্টিং সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বললাম।
সে তার নাম আমাকে জানালো। সে তার এন্ড্রোয়েড ফোন আনে নাই বিধায়, আমাকে বলল ফেসবুকে একটা ম্যাসেজ দিতে।
তার প্রোফাইলে গিয়ে দেখি, তার সাথে আমি add আছি। তাকে একটা Hi লিখে টেক্সট করতে গিয়ে দেখি, তার সাথে আগেও কথা হয়েছে। সময় স্বল্পতার কারণে আগের ম্যাসেজ আর পড়া হলো না। ওভাবেই ফোন পকেটে রেখে, কাজ মিটিয়ে বাড়ি চলে এলাম।
দু দিন পর ইনবক্স ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে এমনিই তার সাথে আমার পূর্বের চ্যাট গুলা ওপেন করলাম। তার সাথে আমার লাস্ট কথা হয়েছিল ২০১৯ সালে।
অবাক হলাম! তখন তো আমি কিছুই নই!
২০১৯ এ আমি স্কিল ডেভেলপ করছি, প্রচন্ড ফ্রাস্টেটেড অবস্থায় আছি, মাঝে মধ্যে টুকটাক যা অর্ডার পাই, তাতে কিছুই হয় না!
ওই সময় এনার সাথে ঠিক কি কথা হয়েছিল আমার?
আগ্রহ বাড়লো জানার জন্য!
আমি একদম উপরে চলে গেলাম। তারপর আগের সব গুলা ম্যাসেজ পড়তে থাকলাম, আর একই সাথে ক্রমশ অবাক হতে থাকলাম!
কিভাবে সম্ভব?
২০১৯ সালে তখন তার সাথে যখন কথা বলেছিলাম, তখন তিনি আপওয়ার্ক-ফাইবার ২ টা তেই টপ রেটেড সেলার!
ঢাকায় তখন তার অফিস ছিল। চাকচিক্যময় জীবন ছিল। অফিসে ছেলেপেলে রেখে কাজ করাতেন!
আমিই তাকে ম্যাসেজ করেছিলাম তার টিমে কাজ করার জন্য!
তার আজ এই অবস্থা?
অবাক হয়ে গেলাম একেবারে। কৌতুহল সংবরণ করতে না পেরে, তাকে ম্যাসেজ দিলাম।
তিনি জানালেন – গিগ র্যাংক হারানোর পরে, অর্ডারের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে। একে একে তিনি কর্মী ছাঁটাই করা শুরু করেন। তারপর কোভিড টাইমে ফাইবার একাউন্ট ব্যান হয়ে যাবার পর, অফিসের ভাড়া পর্যন্ত দিতে পারছিলেন না। অনেক ধার দেনাও হয়ে পড়েছিলেন!
তারপর সবশেষে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছেন। এখন তার গ্রামের বাড়িতে থাকেন। গ্রামে একটা মুদি দোকান দিয়েছেন আর বাবার জমিতে কিছু চাষাবাদ করেন!
জীবন চালানো এখন তার জন্য খুবই কষ্টকর! সেদিন ব্যাংকে এসেছিলেন লোনের জন্য! দুই বাচ্চা নিয়ে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে তার!
এই হচ্ছে ২০১৪ সালে শুরু করা একটা নতুন ফ্রিল্যান্সারের, ২০১৯ সালে গড়ে তোলা সম্রাজের গল্প। এবং ২০২৪ এ এসে তার পতনের করুণ কাহিনী!
তার সম্রাজের পতনের কারণ কি জানেন?
- মার্কেটপ্লেসে অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা
- পার্সোনাল ব্রান্ড তৈরি না করা
- বিলাসবহুল জীবনযাপন
- স্কিল ডেভেলপ না করা
- সাইড ইনকাম সোর্চ তৈরি না করা
- টাকার সঠিক ব্যবহার করতে না পারা
ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি!
তার জীবনে এসব কোন সমস্যা হতো না – যদি কিনা তিনি প্রথম থেকেই নিজের ক্যারিয়ারকে গুছিয়ে নিতে পারতেন!
তার গল্প শুনে ভয় করছে?
হতাশ হচ্ছেন?
ক্যারিয়ার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত মাথায় আসছে?
সব টেনশন ঝেড়ে ফেল দিন। কারণ, আপনার জীবনে এ সমস্যা গুলো আসবে না।
আসবে না এই সমস্যা গুলো আপনার জীবনে।
কেন জানেন?
কারণ, আপনি এই ভুলগুলো করবেন না। আমি আপনাকে করতে দিবো না!
আপনার ক্যারিয়ারকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিতে যা যা করা দরকার, সে সব কিছু করতেই আমি নিজে আপনাকে হেল্প করবো।
এই সম্পুর্ন বইটা পড়ার পর, আপনার সামনে নতুন একটা পৃথিবীর দরজা খুলে যাবে। বইটা পড়ার আগের আপনি আর পরের আপনির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য খুঁজে পাবেন। নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন নতুন করে।
আপনার চিন্তায় পরিবর্তন আসবে, আপনার দর্শনে পরিবর্তন আসবে, আপনার কর্মকান্ডে পরিবর্তন আসবে।
আর একবার আপনার মধ্যে এই পরিবর্তন চলে এলে, আপনি নিজেই নিজেকে এখনের তুলনায় শতগুণ সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। কারণ, আপনি জানতে চলেছেনঃ
- বিপদ আসলে ঠিক কোথায়?
- কিভাবে সেই বিপদ থেকে দূরে থাকা যায়?
- কিভাবে আপনি আপনার ওই ছোট্ট বেডরুম থেকে সারা পৃথিবীর কাছে নিজেকে এক অন্যন্য ব্রান্ড হিসেবে তুলে ধরবেন?
- কিভাবে টাকাকে কাজে লাগাবেন?
- কিভাবে নিজের বিজনেস দাঁড় করাবেন, এজেন্সি দাঁড় করাবেন?
- কিভাবে ব্যাংক ব্যাল্যান্স বাড়াবেন?
- আর কিভাবেই বা টাকার গাছ লাগিয়ে নিজেকে নিশ্চিন্ত করে রাখতে পারবেন?
তাহলে চলুন, আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করি।
শুধু একটা রিকোয়েস্ট। এই বইটি শুধু পড়ার জন্য পড়বেন না। তাহলে আমার প্রয়াস ব্যর্থ হবে। এই বইতে যা যা শেয়ার করতে চলেছি, সেগুলো শুধু পড়া নয়, বরং আপনার জীবনে সম্পুর্নটাই এপ্লাই করতে হবে।
যদি তাই করতে পারেন, তাহলে আপনার পক্ষে একটা স্মার্ট ক্যারিয়ার দাঁড় করানো সম্ভব। তাই মাথা থেকে বাকি ১০-২০ টা ক্যারিয়ার অপশনের চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিন। ফ্রিল্যান্সিং কেই আমরা প্রোপারলি ব্যবহার করবো, এখান থেকেই বিজনেস গড়ে তুলবো, এখান থেকেই আরও ১০ টা আর্নিং সোর্চ বের করবো, এবং এটার উপরেই ভর করে আমাদের কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলবো, স্মার্ট ক্যারিয়ার গড়ে তুলবো।
যাদের বই পড়ার অভ্যাস নাই, তারা হয়তো মাঝ পথেই পড়া বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু যারাই এই বইটা সংগ্রহ করবেন, তাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, বইটা সম্পুর্ন কমপ্লিট করবেন। এই বইয়ে প্রতিটা অধ্যায়ে সোনার খনির মতো বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয় আপনার চিন্তাকে নতুন মাত্রা দিবে। ডিজিটাল দুনিয়া যে কত বড়, কত ভাবে কাজ করা যেতে পারে সে সম্পর্কে আপনার নতুন একটা ধারণা তৈরি হবে। টাকা উপার্জনের পাশাপাশি সেটা ধরে রাখার জন্য এবং সম্পদ গড়ে তোলার জন্য কি করণীয় সে সবকিছুই শিখতে চলেছেন।
তাহলে চলুন, আমাদের যাত্রা শুরু করি।
Course Content
শুরুর আগে কিছু কথা
-
কিছু কথা